বাংলা উচ্চারণের নিয়ম: পার্ট-১ । এইচএসসি পরীক্ষা, বাংলা দ্বিতীয় পত্র ।।
বাংলা উচ্চারণের নিয়ম
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজকের ব্লগের বাংলা উচ্চারণের নিয়ম নিয়ে আলোচনা করব। বাংলা উচ্চারণের আলোচনাকে আমরা ২ ভাগে ভাগ করেছি। এটি ১ম পর্ব। এই পর্বে আমরা আলোচনা করব- অ-ধ্বনির উচ্চারণ, এ-ধ্বনির উচ্চারণ, ব-ফলার উচ্চারণ, য-ফলার উচ্চারণ এবং ম-ফলার উচ্চারণ।
অ- ধ্বনির উচ্চারণ
১. শব্দের
আদিতে ’অ’ স্বাধীনভাবে বসলে এবং এরপর ই,ঈ বা তাদের কার থাকলে ’অ’-এর উচ্চারণ ’ও’- এর
মতো হয়।
যেমন-
অভিমান = ওভিমান্, অতীত = ওতিত।
২. আদ্য
‘অ’ এর পর য-ফলা যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ থাকলে ‘অ’-এর উচ্চারণ ‘ও’-এর মতো হয়।
যেমন- অধ্যক্ষ = ওদ্ধোক্খো, অদ্য = ওদ্দো
৩. আদ্য
‘অ’-এর পর ‘ক্ষ’ থাকলে ‘অ’-এর উচ্চারণ ‘ও’-এর মতো হয়।
যেমন- লক্ষণ = লোক্খোন্, যজ্ঞ = জোগ্গো
৪. রেফ
যুক্ত শব্দের বানানে য-ফলা ব্যবহৃত হয় না, হলেও আদ্য ‘অ’-এর উচ্চরণ ‘ও’-এর মতো হয় ।
যেমন- পর্যায় = পোরজায়্, চর্যাপদ = চোরজাপদ্
৫. একাক্ষর
শব্দের প্রথমে ‘অ’ এবং পরে ‘ন’ থাকলে কোথাও কোথাও সে ‘অ’-এর উচ্চারণ ‘ও’-এর মতো হয়।
যেমন-
মন = মোন্
আরো পড়ুন- পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার উপায়।
ব্যতিক্রম
১. ’ক্ষ’-
এর সাথে অন্য কোনো বর্ণ যুক্ত থাকলে ‘অ’-এর উচ্চারণ অবিকৃত থাকে।
যেমন- যক্ষ্মা = জকখা, পক্ষ্ম = পকখো
২. ‘অ’-যুক্ত
র-ফলার পরে ‘য়’ থাকলে সেই ‘অ’-এর উচ্চারণ অবিকৃত থাকে।
যেমন- ক্রয় = ক্রয়্, ত্রয় = ত্রয়্
৩. নেতিবাচক
বা না অর্থে ‘অ’ বা অন্ এবং সহায় বা সহিত অর্থে ‘স’ যুক্ত থাকলে ‘অ’-এর উচ্চারণ অবিকৃত
থাকে। যেমন- অনিকেত = অনিকেত,অবিচার = অবিচার্
এ- ধ্বনির উচ্চারণ
১। শব্দের
শুরুতে ‘এ’- কার এবং তারপরে ই, ঈ, উ, ঊ, এ এবং ও -কার থাকলে আদ্য 'এ' এর উচ্চারণ ‘এ-র
মতোই হয়। যেমন: দেখি, ঢেঁকি, একুশ, খেয়ে, মেয়ে, মেঠো, তেতো ইত্যাদি।
২। শব্দের
শুরুতে ‘এ’ কারের পর যদি ং/ঙ থাকে এবং তারপরে ই, ঈ, উ, ঊ ছাড়া অন্য ধ্বনি থাকলে ‘এ’
এর উচ্চারণ ‘অ্যা’ হয়। যেমন: টেঙরা (ট্যাংরা), লেংড়া (ল্যাংড়া), ভেংচা (ভ্যাঙ্গা)
।
৩। ‘এ’
কার যুক্ত একাক্ষর ধাতুর সঙ্গে ‘আ’ যুক্ত হলে সাধারণত সেই ‘এ’ এর উচ্চারণ ‘অ্যা’ এর
মত হয়। যেমন: দেখা (দ্যাখা), হেলা (হ্যালা), খেদা (খ্যাদা) ইত্যাদি।
৪ । ধাতুর
মূলে ‘ই’ কার ছিল এমন শব্দে ‘এ’ এর উচ্চারণ ‘এ’-র মতোই হয় ।
যেমন:
শেখা (শিখ্ ধাতু থেকে), কেনা (কিন্ ধাতু থেকে), মেলা (মিল্ ধাতু থেকে) ইত্যাদি ।
৫। একাক্ষর
সর্বনাম পদের ‘এ’ কারের উচ্চারণ ‘এ’-র মতোই হয়।
যেমন: কে, সে, যে ইত্যাদি ।
আরো পড়ুন: এইচএসসি পরীক্ষায় কোন বিষয়ে কত পেলে পাশ।
ব - ফলার উচ্চারণ
১. আদ্য
ব্যঞ্জনবর্ণ ব-ফলা যুক্ত হলে সাধারণত সেই ব-ফলার কোনো উচ্চারণ হয় না।
যেমন- স্বাধিকার = শাধিকার্, স্বদেশ= শদেশ্
২. শব্দের
মধ্যে কিংবা শেষে ব-ফলা থাকলে যুক্ত বর্ণের উচ্চারণ দ্বিত্ব হয়৷
যেমন- আশ্বিন = আশশিন্, অশ্ব = অশশ
৩. উৎ
(উদ) উপসর্গযোগে গঠিত শব্দের ৎ (দ) এর সাথে ব-ফলার 'ব' অবিকৃত থাকে।
যেমন- উদ্বেগ = উদ্বেগ, উদ্বোধন = উদ্বোধন্
৪. ব এবং
ম এর সাথে যুক্ত ব ফলা অবিকৃত থাকে।
যেমন- সম্বর্ধনা = শম্বর্ধোনা ,সম্বোধন = শম্বোধন্
৫. যুক্ত
ব্যঞ্জনের সাথে যুক্ত ব-ফলার উচ্চারণ হয় না।
যেমন- পার্শ্ববর্তী = পার্শোবোর্তি, উজ্জ্বল
= উজ্জল্
ম - ফলার উচ্চারণ
১. শব্দের
আদিতে ম-ফলার কোনো উচ্চারণ হয় না।
যেমন- স্মরণ= শঁরোন্, শ্মশান- শঁশান্
২. শব্দের
মধ্যে বা শেষে 'ম'-ফলা থাকলে যুক্ত বর্ণের উচ্চারণ দ্বিত্ব হয়।
যেমন- আকস্মিক = আকোশ্শিঁক্, বিস্ময় = বিশ্শঁয়্
৩. গ,ঙ,ট,ণ,ন,ম,ল
-এর সাথে যুক্ত ম-এর উচ্চারণ অবিকৃত থাকবে।
যেমন- বাগ্মী = বাগ্মি, মৃন্ময় = মৃন্ময়্
৪. যুক্ত
ব্যঞ্জনের সাথে যুক্ত ম-ফলার উচ্চারণ হয় না।
যেমন- সূক্ষ্ম = শুক্খোঁ, লক্ষ্মণ = লক্খোঁন
য-ফলার উচ্চারণ
১. আদ্য
বর্ণে য-ফলা যুক্ত হলে বর্ণটি অকারান্ত বা আকারান্ত হলে এর উচ্চারণ অ্যা এর মতো হয়।
যেমন- ব্যক্ত = ব্যাক্তো, ধ্যন = ধ্যান্
২. যুক্ত
বর্ণের সাথে ব-ফলার উচ্চারণ হয় না।
যেমন- সন্ধ্যা = শোন্ধা, মর্ত্য = মর্তো
৩. শব্দের
মধ্যে বা শেষে য ফলা থাকলে যুক্তবর্ণের উচ্চারণ দ্বিত্ব হয়।
যেমন-
অদ্য = ওদ্দো, প্রজ্ঞা = প্রোগ্গাঁ
দ্বিতীয় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করো। - দ্বিতীয় পর্ব
কোন মন্তব্য নেই